বর্তমান সময়ে জন্ম নিবন্ধন ছাড়া অন্য কিছু বিকল্প ভাবাই যাচ্ছেনা। একটা সময় ছিল জন্ম নিবন্ধনের হাতের লেখাতে চলত। কিন্তু সমযের পরিবর্তনের সাথে সাথে ডিজিটাল এর ছোয়াতে দেশকে এগিয়ে নিতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ও অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে ডিজিটাল কপি সংগ্রহ করতে হবে। অবশ্যই এটা একটা ভালো উদ্যোগ কারণ সব সময় অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বাংলাদেশকেও ডিজিটাল করতে হবে। তাই তথ্যও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একাই সুযোগ ছিল।

নতুন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে হলে বাচ্চার জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বাচ্চার মা ও বাবার জন্ম নিবন্ধন ডিজিটালভাবে আগে আবেদন করতে হবে তারপর বাচ্চারটা আবেদন করতে হবে। আবেদন ফরম পূরণ করার পর আবেদন ফরমটি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা নিয়ে অথবা জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।

অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে নতুন জন্ম নিবন্ধন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করবেন, আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হবে, কি কি কাগজপত্র প্রয়োজ হবে এবং আবেদন ফি এর সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের জানিয়ে দিব।

আপনি যদি সঠিক উপায়ে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে চান আমরা ছবিসহ আবেদনের নিয়ম সঠিকভাবে দিয়ে রাখবো পোস্টে পড়ার পরে আপনার অন্য কোন জায়গায় যেতে হবে না । ছবিসহ আমরা দিয়ে রাখবো।

কোন এক সময় হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে জন্ম নিবন্ধন লেখা হয়ে যেত কাজ হয়ে যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে ডিজিটাল করার কারণে সম্পূর্ণ ডেটাডাটা গুলো যুক্ত থাকে। তাই এখানে কোন ভুল তথ্য দিয়ে পরবর্তীতে সংশোধনের জন্য খুব কষ্ট হবে দৌড়াতে হবে আপনাকে। আবেদন করার সবাই সাবধানে সঠিকভাবে সঠিক ভাবে আবেদন করুন।

জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন করার নিয়ম:
২০০৪ সালের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আপনার অসাবধানতা বা কোন অসুবিধার কারণে যদি ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন এর আবেদন না করতে পারলে আপনি আপনার শিশুর পাঁচ বছরের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করিয়ে নিতে পারবেন।

আপনার শিশুর পাঁচ বছর পরে যদি জন্ম নিবন্ধন না করেন পাঁচ বছরের পরে অতিরিক্ত কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে।

জন্ম নিবন্ধন করতে যেসব ডকুমেন্ট বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগে:
১) বাচ্চার টিকা কার্ড বা হাসপাতালে ছাড়পত্র
২) পিতা ও মাতার মোবাইল নাম্বার যে কোন একজনের
৩) পিতা ও মাতার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন
৪) পিতা-মাতার এনআইডি কার্ড

শিশুর বয়সের উপর কাগজপত্রের প্রয়োজনটা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে তার বিবরণ নিচে দেয়া হল:
০ থেকে ৪৫ দিন ও ৫ বছর পর্যন্ত :

১) আপনাকে ইপিআই টিকা কার্ড বা হাসপাতালে ছাড়পত্র সাথে রাখতে হবে
২) বাচ্চার পিতা ও মাতার জন্ম নিবন্ধন থাকতে হবে অনলাইন ডিজিটাল কপি
৩) পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ড থাকতে হবে।

৫ বছরের উপর থেকে যেমন ১৮/১৯/২০/২২ বছর হলে:

১। টিকা কার্ড সাথে রাখলে ভালো হবে
২। বাচ্চার স্কুল/কলেজে/মাদ্রাসা কর্তৃক মার্কশীট
৩। মা-বাবার আইডি কার্ড
৪। মা-বাবার জন্মনিবন্ধন এর অনলাইন কপি বা ডিজিটাল কপি
৫। এক কপি ছবি

Let’s go to see Birth Certificate Online Application Proper System

আবেদন করার জন্য প্রথমে এখানে ক্লিক করুন: https://bdris.gov.bd/br/application

এবার আস্তে আস্তে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।

ধাপ :

অনলাইনে আবেদনের জন্য উপরের লিঙ্কে প্রবেশ করার পরে নিচের ছবির মতো একটি পেজ পাবেন। সেখান থেকে যেকোনো একটি অপশন বাছাই করুন। যেকোনো একটি বাছাই করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

আপনার নাম বাংলায় এবং ইংরেজিতে কোন রকম ডট, কমা ছাড়া লিখুন। প্রথম অংশ এবং দ্বিতীয় অংশ, সন্তানক্রম মানে আপনি কত নম্বর সন্তান সেটি সিলেক্ট করুন, জন্মস্থানের ঠিকানা দিন।

এখানে মনে রাখতে হবে জন্মস্থানের ঠিকানা আপনার বাবার যে ঠিকানা সেটাই আপনি ব্যবহার করবেন করলে আপনার বাবার আইডি কার্ডের সাথে আপনার জন্ম নিবন্ধনের ঠিকানা ম্যাচিং হবে।

ধাপ ২ : পিতা মাতার তথ্য :

এখানে তথ্যের ঘরে পিতার জন্মনিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ লিখলেই অটোমেটিক পুরো ঘর পূরণ হয়ে যাবে। মাতার তথ্যের ঘরে মাতার জন্মনিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ দিলেই পুরো ঘর অটোমেটিক পূরণ হয়ে যাবে। অনেক সময় পিতার জাতীয়তা ম্যানুয়ালি সিলেক্ট করে দিতে হয়। মনে রাখতে হবে পিতা ও মাতার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন বা ডিজিটাল আগে করে নিতে হবে। পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

৩য় ধাপ: স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা


এই পর্যায়ে স্থায়ী ও জন্ম স্থানের ঠিকানা দিতে পারেন। আপনি যদি জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা একই রাখতে চান তাহলে চেকবক্সটিতে টিক দিয়ে দিবেন। নিচে দেখুন বর্তমান ঠিকানা দেওয়ার জন্য বক্স আছে আপনি যদি স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা একই রাখতে চান তাহলে চেকবক্সটিতে টিক দিয়ে দিতে হবে। আর যদি আপনার ইউনিয়ন পরিষদ/সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভাটি জন্মস্থান, স্থায়ী ঠিকানার বাহিরে হয় তাহলে যেখান থেকে জন্ম নিবন্ধন নিতে চান সে ইউনিয়ন পরিষদ/সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভার ঠিকানা দিন। আর যদি জন্মস্থান, স্থায়ী, বর্তমান একই ঠিকানা হয়। তাহলে বর্তমান ঠিকানা অন্যটি দিতে হবে না। এরপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

৪র্থ ধাপ: আবেদনকারী তথ্য দিন

এখানে যে ব্যক্তি তার বাচ্চার পিতার/মাতা অথবা নিজ অপনশনটি সিলেক্ট করলে হবে। নিচের দিকে সংযোগ এ ক্লিক করে 100 কেবি এর নিচে দুইটি ফাইল অ্যাটাচমেন্ট করতে হবে । পরের ধাপে যাওয়ার জন্য পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

৫ম ধাপ: ওটিপি যাচাইকরন

এ পর্যায়ে পরো তথ্যগুলো পুনরায় আপনি দেখতে পাবেন যদি কোথাও ভূল থাকে তা সংশোধন করে নিবেন। এখন আপনি সচল একটি ফোন নম্বর দিয়ে ওটিপি পাঠান বাটনে চাপ দিন। আপনার ফোনে 6 সংখ্যার ওটিপি কোডটি খালি ঘরে দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিন।

আবেদনটি সফলভাবে সাবমিট হলে নিচর ছবিটির মতো দেখতে পাবেন।

আবেদনপত্রটি প্রিন্ট করে ইউনিয়ন পরিষদের বা পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনে গিয়ে যোগাযোগ করে অরিজিনাল কপিটি নিয়ে আসবেন। এছাড়াও ১৫ দিনের মধ্যে আপনি যদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহকারে আবেদনপত্রের কপিসহ জমা না দেন অটোমেটিক ১৫ দিনের পর বাতিল হয়ে যাবে।

জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন ভেরিফাইড কপি বের করা নিয়ম:

আপনার ডিজিটাল বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন পাওয়ার পরে অনেক সময় ভেরিফাইড কপি কাজে লাগে বা কোন ক্ষেত্রে স্কুল, মাদ্রাসা কিংবা কলেজে প্রয়োজন হতে পারে। অনলাইন ভেরিফিকেশন কপি বিভিন্ন অফিস, আদালতেও প্রয়োজন হতে পারে। জন্ম নিবন্ধন এর অনলাইন ভেরিফিকেশনের কপি পাওয়ার জন্য নিচের লিঙ্কে ক্লিক জন্ম নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে সার্চ করলেই চলে আসবে। এক্ষেত্রে জন্ম তারিখ দেয়ার সময় প্রথমে বছর-মাস-দিন দিয়ে নিচের সংখ্যাটির যোগফল যত হবে সেটি খালি বক্সে লিখে সার্চ করলেই হয়ে যাবে।

সার্চ রেজাল্ট কপি উপরের ছবিটির মতো দেখতে হবে। উপরের ছবিটি নমুনস্বরুপ দেখানো হয়েছে।

Link: https://everify.bdris.gov.bd

মৃত্যু নিবন্ধনের/সনদের অনলাইন ভেরিফাইড কপি বের করা নিয়ম:

উপরোক্ত নিয়মেই ডিজিটাল বা অনলাইন মৃত্যু নিবন্ধন পাওয়ার পরে অনেক সময় অনলাইন ভেরিফাইড কপি কাজে লাগে বা কোন ক্ষেত্রে স্কুল, মাদ্রাসা কিংবা কলেজে প্রয়োজন হতে পারে। মৃত্যু নিবন্ধন এর অনলাইন ভেরিফিকেশনের কপি পাওয়ার জন্য নিচের লিঙ্কে ক্লিক মৃত্যু নিবন্ধন নাম্বার এবং জন্ম তারিখ দিয়ে সার্চ করলেই চলে আসবে। এক্ষেত্রে জন্ম তারিখ দেয়ার সময় প্রথমে বছর-মাস-দিন দিয়ে নিচের সংখ্যাটির যোগফল যত হবে সেটি খালি বক্সে লিখে সার্চ করলেই হয়ে যাবে।

Link: https://everify.bdris.gov.bd/UDRNVerification

উপরের লিঙ্কে ক্লিক করে আপনার মৃত্যু সনদের অনলাইন ভেরিফাইড কপি বের করে নিতে পারেন খুব সহজেই।

জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার জন্য ক্লিক করুন: https://birthcertificateonline.net/birth-registration-certificate-correction/

জন্ম নিবন্ধন আবেদন সংক্রান্ত যেসব প্রশ্ন থাকে সেগুলোর উত্তর নিচে দেয়া হল।

জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে (What does it take to register a birth certificate online system?

উত্তরঃ জন্ম নিবন্ধন করার জন্য প্রথমে আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে তারপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো অনলাইনে আবেদনের অফিস যেমন পৌরসভা / র্সিটি কর্পোরেশন / ইউনিয়ন পরিষদে এগিয়ে জমা দিতে হবে।

জন্ম নিবন্ধনের অরিজিনাল কপি কি অনলাইন থেকে নেয়া যাবে (Original copy of birth certificate can be taken online)?

উত্তরঃ না। আপনাকে সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অরিজিনাল কপি নিতে হবে । অনলাইন থেকে শুধু ভেরিফিকেশন কপি দিতে পারবেন।

একজনের জন্ম নিবন্ধন কয়েকটা কি করা যাবে (What can be done to register one’s birth)?

না। প্রতিটি লোকের জন্য একটি করে জন্মনিবন্ধন কপি পাওয়া যাবে। কোন পরিবর্তন করতে চাইলে সংশোধন আবেদন করা যাবে।

আবেদন অনলাইনে আবেদন করার ওয়েবসাইট কোনটি (Which is the website to apply birth certificate online)?

উত্তরঃ অনলাইনে আবেদন করার জন্য এই লিঙ্কে https://bdris.gov.bd/br/application প্রবেশ করুন প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাবমিট করুন।

পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন কি বাধ্যতামূলক (Is birth registration of parents mandatory)?

উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই বাধ্যতামূলক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here