আপনারা দোকান কিংবা বাসার জন্য মিটারের প্রয়োজন হয়ে থাকে তো আপনারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেন যে কোন একটি লোকের মাধ্যমে মিটারটি আনা যায়। কষ্ট না করে আপনি খুব সহজে কোন লোকের মাধ্যম ছাড়া নিজেই অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার পেতে পারেন। কোন প্রকার দালালের হাতে যাবেন না। এ দালালের সমস্যা দূর করতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নতুন সংযোগের জন্য অনলাইন আবেদন সিস্টেম চালু করেছে।
কিভাবে আপনি পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন তার বিস্তারিত নিয়ম জানবো।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন (Palli bidyut meter apply)

সামান্য শর্ত মেনেই আপনি নিজেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিটারের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিছু ডকুমেন্টস লাগবে যেগুলো স্ক্যান করে আপনি মোবাইল কিংবা কম্পিউটারে পূর্বে থেকে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। আপনি চাইলে আবেদনটি মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন । আবার কম্পিউটার থাকলে কম্পিউটার দিয়েও করতে পারেন। এটা বলে রাখা ভালো কম্পিউটারে সব সময় আবেদন করতে সহজ ও সময় সাশ্রয়ী হয়।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদনের যেসব শর্তাবলী (Palli bidyut meter application Requirement)

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওয়েবসাইট http://www.rebpbs.com এ লগইন করলে বা প্রবেশ করলেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিটার আবেদন এর যেসব শর্তাবলী তা দেখতে পাবেন এবং সুন্দর করে তা পড়ে নিবেন। শর্তগুলো নিচে স্পষ্ট করে দেওয়া হলো।

১। আবেদনকারী ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্র
২। আপনার জমির মালিকানা বা আপনার দোকানের মালিকানা বা দোকানের ট্রেড লাইসেন্স বা জমির দলিলের স্ক্যান কপি রাখতে হবে
৩। সংযোগস্থল হইতে খাম্বার দূরত্ব ১৩০ ফুটের মধ্যে হবে
৪। খাম্বার দূরত্ব সঠিকভাবে না দিলে তারের দৈর্ঘ্য অর্থাৎ কম বেশি হতে পারে তাই সঠিক তথ্য দিতে হবে।
৫। অনলাইন সাবমিট করার পর আপনার মিটারের আবেদন ফ্রি ও নিরাপত্তা জামানত সকল নির্দেশনা এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।
৬। আবেদন ফরমের লাল তারকা চিহ্নিত ঘরগুলো পূবন করা আবশ্যক
৭। একটি অ্যাক্টিভ মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটারে আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

নতুন সংযোগ পাওয়ার জন্য দুভাবে আবেদন করা যায়

১। সরাসরি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অর্থাৎ এটি অফলাইনে

২। অনলাইনের মাধ্যমে ও করা যাবে।

আপনি অনলাইন কিংবা অফলাইনে যেভাবেই করেন না কেন নিমুক্ত ডকুমেন্ট আবশ্যই প্রয়োজন হবে।

১। আবেদনকারীর সঠিক নাম সাথে এন আই ডি
২। এনআইডি কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা ও সংযোগস্থলের ঠিকানা।
৩। আপনি যেই ট্রান্সফরমার অর্থাৎ যেই বৈদ্যুতিক খুঁটি বা খাম্বা হতে সংযোগ নিতে চান সে ট্রান্সফরমার বা বৈদ্যুতিক খুটি বা খাম্বা আওতায় আপনার পাশের যে গ্রাহক আছে তার বই নং ও হিসাব নং সংগ্রহ করুন।
৪। আপনার কাঙ্ক্ষিত যে খাম্বাটি থাকবে বা যে খাম্বা থেকে আপনার বাসা কিংবা দোকান এ থেকে সংযোগ নিতে চান সেটির দূরত্ব আপনার ঘর বা দোকান হতে কত ফুট তা নিশ্চিত করতে হবে। অবশ্যই 130 ফুটের বেশী হতে পারবে না। যদি ১৩০ বেশী দূরত্ব হয় তাহলে আরেকটি খুটি স্থাপন করে নিতে হবে।
৫। আপনার ঘর কিংবা দোকান ওয়ারিং করা হয়েছে তার নিশ্চয়নের জন্য প্রমাণপত্র হিসেবে গ্রাউন্ড রডের ক্যাশ মেমো ছবি বা স্ক্যান কপি রাখতে হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন।

উপরোক্ত যে ডকুমেন্টের কথা বলা হয়েছে তার সবগুলো আপনি সংগ্রহ করে এই অনলাইনের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন করতে পারেন। অনলাইনে আবেদনের জন্য নিচে দাঁপগুলো অনুসরণ করতে হবে চিত্রসহ দেখানো হয়েছে।

আবেদন ফরম পূরণ।


ধাপঃ ১।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিটার নতুন সংযোগ নিতে অনলাইনের মাধ্যমে http://www.rebpbs.com এই লিংকে প্রবেশ করুন। নিচে ছবি দেয়া হল

দ্বিতীয় ধাপঃ

ওয়েবসাইটিতে প্রবেশ করার পরে আপনার সামনে আবেদন নামে একটি ট্যাব থাকবে এখানে আবে মাউস নিয়ে হবার কোন মাউস নিন এবং আবেদন করুন এই লেখাটিতে ক্লিক করুন। ক্লিক করার সাথে সাথে নিচের ছবির মত একটি ফরম আসবে।

উক্ত ফরমে যেসব স্টার (*) যুক্ত লাল চিহ্ন দেয়া রয়েছে সেগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে এবং জোনাল অফিস ও জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এলাকা অনুযায়ী সিলেক্ট করুন।
এক্ষেত্রে একক বাসা বাড়ির হলে সংযোগ ট্রারিফ হিসেবে এলটিএ অর্থাৎ আবাসিক সিলেক্ট করুন। আর বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ির ক্ষেত্রে অবশ্যই এমটিএ অর্থাৎ আবাসিক সিলেক্ট করুন। তারপর আবেদনকারীর নাম পিতার নাম এবং যেগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে সেইসব তথ্য পূরণ করে দিতে হবে।

তৃতীয় ধাপঃ স্থায়ী ঠিকানা সাথে সংযোগ স্থানের বিবরণ।

প্রথমে আপনাকে স্থায়ী ঠিকানা পূরণ করতে হবে। এখানে জেলা উপজেলা থানা ইউনিয়ন ইত্যাদি ইত্যাদি সব তথ্য দিয়ে দিবেন আইডি কার্ড অনুসারে এবং প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ সংযোগস্থলের আপনি যে স্থানে বিদ্যুৎ নিতে চান ঐ স্থানের ঠিকানা সঠিকভাবে দিয়ে দিবেন।

চতুর্থ ধাপঃ

জিওগ্রাফিক তথ্যটি সঠিকভাবে জেনে বুঝে পূরণ করবেন। এখানে তারা বলে দিয়েছে যে নিকটবর্তী সার্ভিস ফুল হইতে সংযোগস্থলে দূরত্ব উপর নির্ভর করে সংযোগ তারের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা হবে। তাহলে আপনি অবশ্যই দূরত্ব মেপে নিবেন সঠিকভাবে। তবে এক্ষেত্রে দূরত্ব যদি বেশি হয় তাহলে নতুন খুঁটি বা লাইন নির্মাণ করতে হবে এবং অনলাইন সার্ভে করে তারা দেখে দূরত্ব ভুল হলে সংযোগ আপনার আবার দেরি হতে পারে। তাই সঠিকভাবে দূরত্ব মেপে নিন।

শেষাংশে আপনি কি কি ব্যবহার করবেন যেমন লাইট, ফ্যান, ইলেকটির ডিভাইসের সংখ্যা ইত্যাদি নির্ধারণ করে দিতে পারেন।

পঞ্চম ধাপঃ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড।

সর্বশেষ আপনার যেসব ডকুমেন্টস এর কথা উপরে বলা হয়েছে সে সব ডকুমেন্টসগুলো অবশ্যই পিডিএফ আকারে আপলোড করে দিন।

সম্মতি বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে এবং ক্যাপচাটি লিখে সংরক্ষণ করুন বাটনে ক্লিক করুন।

আবেদনপত্র প্রিন্ট।


আবেদন পত্রটি পূরণ হয়ে গেলে এটি প্রিন্ট আউট করে বের করে আপনার নিজের কাছে রাখবেন এবং আবেদনের ট্রাকিং নাম্বারটি ওপেন নাম্বারটি আপনি সঠিকভাবে একটি নোটে লিখে রাখতে পারেন কারণ এটি পরিবর্তে প্রয়োজন হবে আবেদনের অবস্থা জানার জন্য।

হাউজ ওয়ারিং নিশ্চিতকরণ।

আপনার বাসায় হাউজ ওয়ারিং অর্থাৎ ওয়ারিং সম্পূর্ণ হয়েছে তা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিতকরণ হল গ্রাউন্ড রড ক্রয়ের মেমো রসিক ট্রাকিং নম্বর ও পিন নাম্বার।

আপনার কাঙ্খিত ওয়েবসাইট টিতে http://www.rebpbs.com প্রবেশ করে হোম পেজের মেনুবার থেকে হাউস ওয়ারিং নামে একটা ট্যাব আছে সেই লিংকে ক্লিক করুন।

এই লিংক থেকে সামনে একটি ট্রাকিং নাম্বার ও পিন নাম্বার দেয়ার জন্য একটি ফরমেট চলে আসবে । এখানে ট্রাকিং নাম্বার ও পিন নাম্বার বসিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

এখানে আপনারে হাউস ওয়ারিং নিশ্চিদের জন্য একটি তথ্য চাইবে অর্থাৎ আপনি হাউস ওয়ারিং নিশ্চিত করেছেন এজন্য টিক চিহ্ন অর্থাৎ সিলেক্ট করুন এবং গ্রাউন্ড ওয়ার্ড ক্রয়ের যে মেমোরিটি রয়েছে ইংরেজিতে লিখুন।

আপনি যে গ্রাউন্ড রডটি ক্রয় করছেন তার ম্যামো বা রশিদটি আপলোড করুন। এরপর আপনার বাড়ির ঠিকানা বা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা লিখে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। সাবমিট করার সাথে সাথে হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিত হয়েছে আপনার কাছে মেসেজ প্রদান করবে।

মিটার সংযোগ ফি পরিশোধের নিয়ম।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার সংযোগ ফি – এটা আপনি দুই ভাবে পরিশোধ করতে পারেন।
১। সরাসরি সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিসের মাধ্যমে বা নির্ধারিত ব্যাংকে
২। রকেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে

যদি আপনি চান কোন ভেজালের সাথে জড়িত হইতে না তাহলে সংযোগ কি সরাসরি গিয়ে পরিশোধ প্রদান করলে হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার সংযোগ আবেদন ফি কত টাকা?

পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের মোট আবেদন ফি হচ্ছে ১১৫ টাকা অর্থাৎ আপনি অফিসে মাধ্যমে দিলেও পরিশোধ করলেও ১১৫ টাকা এবং অনলাইন বা রকেট এর মাধ্যমে পরিশোধ করলেও ১১৫ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।

আবেদনের অবস্থা সম্পর্কে জানুন।

আপনি অনলাইনে আবেদন করার পর এখন আপনার আবেদনটি কোন অবস্থায় আছে তার অবশ্যই জানতে পারবেন। এজন্য কাঙ্খিত ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করুন http://www.rebpbs.com এবং মেনুবার থেকে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানুন অপশন দিতে ক্লিক করুন।

এখানে আপনার কাছ থেকে ট্রাকিং নাম্বার ও পিন নাম্বার চাইবে এগুলো অবশ্যই আপনি আগে সংরক্ষণ করে রেখেছেন তো সেই পিন নাম্বার ও ট্রাকিং নাম্বারটি দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আপনার আবেদনটি কোন অবস্থায় আছে তা চলে আসবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here