আপনি পরই ক্রয় সূত্রে জমির মালিক হয়ে থাকলে অথবা পৈত্রিক সূত্রে জমির মালিক হলে তথ্য হালনাগাদ বা সংশোধন করে নতুন মালিকের নামে জমির রেকর্ড করাকে ই নামজারি করা হয়। বর্তমান সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে নামজারির আবেদন করতে হয়। এটিই হচ্ছে ই-নামজারি। ই-নামজারি করতে যে ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন ও যা যা প্রয়োজন তা সম্পর্কে আলোচনা করব।

ই-নামজারি করার নিয়ম।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভূমি সেবা মানুষের কাছে খুব সহজে পৌঁছে দেয়ার লক্ষে অনলাইনে নামজারি করার ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে অনলাইন ব্যবহার করে যে কেউ অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে জমির অনলাইনে নামজারির আবেদন করতে পারবে।

অনলাইনের মাধ্যমে আপনার জমির খাজনা পরিষদ খতিয়ান উঠানো ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রম আপনি নিজেই ঘরে বসে করতে পারবেন। তাহলে চলুন অনলাইনে নামজারি করতে কি কি ডকুমেন্ট এবং নামজারির আবেদন করার নিয়ম ও কত টাকা ফ্রি পরিশোধ করতে হবে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ

নামজারি করতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজনঃ

১। আবেদনকারীর ছবি ও এনআইডি কার্ড
২। আবেদনকারীর সিগনেচার।
৩। ক্রয়কৃত বা ওয়ারিশ সূত্রে জমির দলিল
৪। ওয়ারিশ সনদ ( প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
৫। সর্বশেষ খতিয়ান ( ক্রয়কৃত জমির খতিয়ান)

এখন আপনি যদি নিজেই নিজের কাজটি করতে চান মানে অনলাইনের মাধ্যমে নামজারির আবেদন করতে চান তার জন্য আপনার একটি স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটার দরকার হবে। তবে আমি সাজেস্ট করব আপনি কম্পিউটারের মাধ্যমে ভালো কাজ করতে পারবেন। এখানে অনেক ধরনের ডকুমেন্ট অর্থাৎ কাগজপত্র আপলোড করতে হয় যা ফোন দিয়ে অনেক সময় ভুল আপলোড হতে পারে তাই সবকিছু সঠিকভাবে করার জন্য কম্পিউটারই বেস্ট হবে। আপনার কোন কাগজপত্র বা তথ্য এলোমেলো হবে না।

অনলাইনে নামজারির আবেদন প্রক্রিয়াঃ

অনলাইনের মাধ্যমে জমির নামজারির আবেদন করার জন্য আপনার যেসব কাগজপত্র গুলো উপরে বলা হয়েছে সেসব কাগজপত্রগুলো স্ক্যান করে কম্পিউটারের একটি ফোল্ডারে সংরক্ষণ করুন। এজন্যই সংরক্ষণ করবেন যে পরবর্তীতে এই কাগজপত্র গুলো অনলাইনে আবেদনের সময় বিভিন্ন কাগজপত্র আপলোড করার প্রয়োজন হতে পারে। তখন যাতে সহজেই আপলোড করা যেতে পারে। অবশ্যই আপনাকে স্কানকৃত ফাইলগুলো যে jpg, pdf আকারে সংরক্ষণ করতে হবে।

যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নামজারির আবেদন করবেনঃ

জমির নামজারির আবেদনের জন্য আপনাকে প্রথমেই ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে mutation.land.gov.bd তে প্রবেশ করতে হবে ‌। প্রবেশের সাথে সাথে আপনার এখানে একটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটটি চলে আসবে। এখান থেকে আপনি অনেক কিছু দেখতে পারবেন যেমন নির্দেশিকা, টিউটোরিয়াল, নামজারির আবেদন, খরচা আবেদন, আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা। এখান থেকে আপনি নামজারির আবেদনটিতে ক্লিক করুন। নামজারির আবেদন করার জন্য কোর্ট 20 টাকা অনলাইনে পেমেন্ট দিতে হবে। এরপর একটি আপনার কাছে ফর্ম চলে আসবে। ফর্মে যেসব তথ্য চাইবে সেসব প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিয়ে পূরণ করুন। পূরণ করার পরে সাবমিট বাটনটিতে ক্লিক করুন এবং পরবর্তী পেজে চলে আসবে। এখান থেকে জমির তফসিল গ্রহীতার তথ্য দাতার তথ্য ও যেসব স্ক্যানকৃত প্রয়োজনীয় ফাইলসমূহ সেগুলো আপলোড করে দিন। এরপর পরবর্তী স্টেপে গিয়ে আপনার পেমেন্টটি সম্পন্ন করুন।

অনলাইনে নামজারির আবেদন চিত্রসহ দেখানো হলোঃ

আপনি যদি ছবি দেখানোর মাধ্যমে খুব সহজে নামজারীর আবেদনটি শিখতে চান বা করতে চান তাহলে চিত্রগুলো দেখে দেখে আপনার নিজের নামজারির আবেদনটি করে ফেলুন। প্রথমে mutation.land.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।


এখানে নির্দেশিকা, টিউটোরিয়াল, নামজারির আবেদন ফরম, আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা ধাপগুলো দেখতে পাবেন। এসবগুলোর মধ্য থেকে আপনি নামজারির আবেদন অপশনটিতে ক্লিক করুন।


এখানে চারটি স্টেপে আপনাকে ফরমটি পূরণ করতে হবে।
প্রথমে নাম যারে আবেদন করার জন্য কোর্ট ফ্রি ২০ টাকা অনলাইনে পরিশোধ করে নিন।

নামজারি আবেদনের কোর্ট ফি নম্বরটি প্রদান করেন এবং মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে ভেরিফাইড করুন অর্থাৎ ভেরিফাইড বাটনে ক্লিক করুন।

এবার ভেরিফাইড হওয়ার পরে আপনি এক থেকে চার পর্যন্ত যেসব তথ্য চাওয়া আছে সেসব তথ্যগুলো পূরণ করুন।

দ্বিতীয় ধাপঃ জমির তফসিল ও গ্রহীতার তথ্য পূরণঃ

এ পর্যায়ে আপনাকে খতিয়ানের ধরন, খতিয়ান নাম্বার দাগ নাম্বার, জমির পরিমাণ ও পরিমাপক, দলিল নাম্বার ও তারিখ জেলা ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিয়ে সামনের দিকে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হন।

তৃতীয় ধাপঃ দাতার তথ্য ও প্রেয়োজনীয় তথ্য সংযুক্তি।

আপনার জমির ওয়ারিশগণের নাম, ঠিকানা, ওয়ারিশ সনদ, মোবাইল নাম্বার, জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার, জন্ম তারিখ, জমির নাম্বার, পরিমাণ দিয়ে এবং সর্বশেষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত প্রদান করুন।

চতুর্থ ধাপঃ পেমেন্ট প্রদান ।

সর্বশেষ এবং চূড়ান্ত ধাপে যে টাকা পেমেন্ট চাইবে সেই টাকা পেমেন্ট করে দিয়ে দিবেন । পেমেন্ট দেওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট যেমন বিকাশ রকেট উপায় যে কোন একদিন মাধ্যমে পেমেন্ট দিতে পারেন। পেমেন্ট দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনার একাউন্টে রাখুন এবং পেমেন্টটি কমপ্লিট করে দিন।

পেমেন্ট কমপ্লিট করার সাথে সাথে আপনাকে পেমেন্ট রিসিট ডাউনলোড করার জন্য বলবে এবং আবেদন কপিটি ডাউনলোড করার জন্য বলবে। আপনি চাইলে দুটোই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। না চাইলে আবেদন কপিটি শুধু ডাউনলোড করে নিতে পারবেন ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here