হেবা মানে হলো অন্যের প্রতি অনুগ্রহ করা। এটি একটি আরবি শব্দ যার আভিধানিক অর্থ হলো অনুগ্রহ করা
। আরো বিস্তারিত বলতে গেলে বা এর সংজ্ঞা বলতে গেলে এভাবে বলা যায় যে কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি কোনরকম বিনিময় ছাড়া অর্থাৎ টাকা ছাড়া স্বেচ্ছায় নিঃস্বার্থ ত্যাগ করে অন্য কাউকে সে সম্পত্তির মালিক বানিয়ে দেওয়া এটাই হচ্ছে হেবা বা একে দান করা বলা হয়।

যদি আরো সহজ করে বলি আপনার সম্পত্তি অন্য কাউকে অন্য কোন রকম বিনিময় ছাড়া চিরস্থায়ী দান করাকে হেবা বলে।

যেসব শর্তগুলো হেবা দানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্যঃ

কোন সম্পত্তি হেবা দান করার জন্য অবশ্যই কয়েকটি শর্ত মেনে চলতে হবে অন্যথায় হ্যাবা কার্যকর হবে না। হেবার যেসব শর্তগুলো মানতে হবে তা নিচে পয়েন্ট আকারে দেয়া হলঃ

১। দাতা কর্তৃক গ্রহীতাকে দখল করার প্রস্তাব দিতে হবে।
২। যে সম্পত্তি হেবা প্রদান করবে সে সম্পতির দাতার দখলে থাকতে হবে।
৩। যে সম্পত্তি হেবা গ্রহণ করবে সে অবশ্যই দাতার প্রস্তাব গ্রহণে সম্মতি দিতে হবে।
৪। গ্রহীতা সেবা প্রদান কৃত সম্পত্তি দখল বুঝে নিবে
৫। দানকৃত হেবা দলিলের অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে

হেবা দলিল কি এর পরিচয়

হেবা দলিল হচ্ছে একটি লিখিত চুক্তি। দলিল কি বা কোনটি এটা জানতে হবে। কোন লিখিত চুক্তিকে দলিল রূপে প্রদান করাকে দলিল বলা হয়ে থাকে। নিঃস্বার্থে নিজের কোন স্থাবর বা স্থাবর সম্পত্তি অন্য কাউকে কোন অর্থের বিনিময় ছাড়া চিরদিনের জন্য বা আজীবনের জন্য লিখিতভাবে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে দখল বুঝিয়ে দেওয়াকে হেবা দলিল বলে।

হেবা দলিলের প্রকারভেদঃ

সবকিছু পর্যালোচনা করে এটা বলা যায় যে বা বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় যে হেবা দলিল সাধারণত দুই প্রকার। যেমনঃ

১। সাধারণ হেবা বা হেবা
২। হেবা বিল এওয়াজ

সাধারণ হেবা কি?

কোন কিছুর বিনিময় ছাড়া যে জমি দান করা হয় সেটা হচ্ছে সাধারণ হেবা। অর্থাৎ কোন অর্থ ছাড়াই দাতার দানকৃত জমি গ্রহীতাকে কোন শর্তসাপেক্ষ ছাড়া গ্রহণ করিবে। সাধারণ হেবার কিছু শর্ত রয়েছেঃ

১। দাতা নিজেই গ্রহীতাকে নিঃস্বার্থে সম্পত্তি দান করিবে
২। দানকৃত সম্পত্তির দখল দাতা গ্রহীতাকে বুঝিয়ে দিবে

হেবা বিল এওয়াজ কি?

কিছু অর্থের বিনিময়ের মাধ্যমে বা বিনিময় শর্তের মাধ্যমে হেবা বিল এওয়াজ দলিল সম্পূন্ন করা হয়। সাধারন জমি ক্রয় এবং বিক্রয় যেসব শর্তাবলী থাকে হেবা বিল এওয়াজ দলিলেও সবগুলোই বিদ্যমান। সম্পত্তির ক্রয় মূল্য বা বিক্রয় মূল্য কম বা বেশি অর্থ্যাৎ অর্থের বিনিময়ে দান করা দলিলেই হচ্ছে হেবা বিল এওয়াজ।

হেবা বিল এওয়াজ দলিলের কিছু শর্ত রয়েছে।

১। গ্রহীতা যে সম্পত্তি গ্রহণ করবে তার মূল্য হেবা দানকারী বা দাতাকে দিতে হবে
২। দাতার জমির মালিকানা স্বত্ব ত্যাগ করার মন মানসিকতা বা উদারতা থাকতে করতে হবে

৩। বিনিময়যোগ্য

হেবা দলিল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াঃ

বাংলাদেশে পারিবারিক সম্পত্তির আইন অনুযায়ী মুসলিমদের ক্ষেত্রে হেবা দলিল লিখিত ভাবে রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক না । তবে হেবা দলিলের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য হয়ে থাকে। এখানে কি ধরনের হেবা করা হয় তা সুস্পষ্ট করে উল্লেখ থাকতে হয়। দাতার সম্পূর্ণ বিবরণ এবং তার পেশা এবং কোন কারণে দাতা গ্রহিতাকে হেবা প্রদান করেছে তা লিখিতভাবে সু-স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হয়। কিসের বিনিময়ে দাতা গ্রহিতাকে হেবা দান করেছেন সেটাও স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

দুইভাবে হেবা দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয়। যথাঃ

১। রেজিস্ট্রেশন ফিস ক্যালকুলেটর পদ্ধতি
২। সাধারণ বা ম্যানুয়াল পদ্ধতি

দলিল রেজিস্ট্রেশন ফিস ক্যালকুলেটর পদ্ধতি নিচে দেখানো হলোঃ

ওয়েবসাইট ভিজিটঃ

এ পদ্ধতিতে আপনার খরচ বের করার জন্য আপনাকে https://fees.dolil.com এই ঠিকানায় প্রবেশ করতে হবে। এই ঠিকানায় প্রবেশ করার সাথে সাথে আপনি নিচের ছবির মত একটি ইন্টারফেস সামনে চলে আসবে।

তথ্য প্রদানঃ

এ পর্যায়ে আপনাকে দলিলের কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে যেমন। দলিলের প্রকৃতি যেমন হেবার ঘোষণা পত্র ধানের ঘোষণা পত্র দান পত্র ইত্যাদি, বিভাগ জেলা এবং অফিসের নাম সেবাকৃত সম্পত্তির মূল্য কত টাকা দলিলের পৃষ্ঠা সংখ্যা ইত্যাদি প্রদান করে দিতে হবে।

আপনি সঠিকভাবে দিলেই ফলাফল নামক একটি বাটন আছে বাটনে ক্লিক করলেই আপনার মোট দলিলের মূল্য অটোমেটিক ভাবে চলে আসবে তখন আপনি নিচের ছবিটির মতো একটি ছবি দেখতে পাবেন বা ফলাফল দেখতে পাবে না।

সাধারণ ম্যানুয়াল পদ্ধতিঃ

এ পদ্ধতি সাধারনত অফিস যেভাবে খরচ ধার্য করা হয় সে ভাবে টাকা পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার উপজেলাধীন ভূমি অফিসের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমেই আপনার কত টাকা খরচ তা জেনে নিতে পারবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here